বান্দবানের রুমায় ব্যাংক লুটের ঘটনায় ব্যাংকার সহ আটক ৫৪!





ন্দরবানের রুমা ও থানচি উপজেলায় ব্যাংক ডাকাতি ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় রুমা সোনালী ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার (ক্যাশিয়ার) লাল তন লিয়ান বমসহ ৫৪ জনকে আটক করেছে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া ৭টি দেশি বন্দুক, ২০টি গুলি, সশস্ত্র গোষ্ঠী কেএনএফের পোশাক, ২ জোড়া বুট, ১টি ছুরি, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় জেলা পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


পুলিশ সুপার জানান, এ পর্যন্ত যৌথ অভিযানে ৫৪ জন আটক হয়েছে। তাঁদের মধ্যে থানচি ও রুমা উপজেলায় আটকের সংখ্যা বেশি। তাঁরা কেএনএফ সদস্য বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।


এ ছাড়া তিন কেএনএফ সদস্যের পাশাপাশি ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত চাঁদের গাড়ির চালককে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গত রোববার রাতে থানচি ও বান্দরবান সদর এলাকার সুয়ালক চেকপোস্টে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।


এদিকে গতকাল সকালে রুমা ও থানচি উপজেলায় অভিযান চালানো ও পরিস্থিতি মোকাবিলায় চারটি আধুনিক সাঁজোয়া যান পাঠানো হয়েছে।


চালকসহ চারজন গ্রেপ্তার


পুলিশ সূত্রে জানা যায়, থানচি থেকে গাড়িচালক মোহাম্মদ কফিল উদ্দিন সাগরকে (২৮) গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। তিনি উপজেলার টিঅ্যান্ডটিপাড়া এলাকার মো. ইউছুফের ছেলে।


আর বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক থেকে ভানুনুন নুয়াম বমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি রোয়াংছড়ির ১ নম্বর রোয়াংছড়ি ইউনিয়নের রৌনিনপাড়া এলাকার জিংচুন নুং বমের ছেলে। এ ছাড়া গ্রেপ্তার জেমিনিউ বম ও আমে লনচেও বম থানচি সদর ইউনিয়নের সিমতাংপিপাড়ার লাল মুন চম বমের ছেলে-মেয়ে।


এ বিষয়ে গতকাল দুপুরে পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, ব্যাংক ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত গাড়ির চালকসহ মোট ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলা দিয়ে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।


সাতটি বন্দুক উদ্ধার


রুমা উপজেলায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৭টি দেশি বন্দুক, ২০টি গুলি, কেএনএফের পোশাক, ল্যাপটপ, বিভিন্ন সরঞ্জামসহ দুজনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।



গতকাল বিকেল পৌনে ৪টায় রুমা জোনের অধিনায়ক লে. কর্নেল কে এম আরাফাত আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রুমার বেতেলপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনায় এসব অস্ত্র ও সরঞ্জাম উদ্ধার এবং দুজনকে আটক করা হয়েছে। আটকদের মধ্যে সন্দেহভাজন হিসেবে রুমা সোনালী ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার লাল তন লিয়ান বম রয়েছেন।


এদিকে সাঁজোয়া যান (এপিসি) পাঠানোর বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, অভিযানের অংশ হিসেবে রুমা ও থানচি উপজেলার জন্য চারটি এপিসি আনা হয়েছে। গতকাল সেগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাঠানো হয়েছে। এগুলো দিয়ে এ দুই উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় টহল দেবেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পরিস্থিতি বিবেচনা করে এপিসি আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।


৩ উপজেলায় যান না চালাতে কেএনএফের হুমকি


রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রাখতে মালিক সমিতিকে হুমকি দিয়েছে কেএনএফ। কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সশস্ত্র শাখা কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেএনএ) ক্যাপ্টেন ফ্লেমিং গতকাল সকালে ফেসবুকে এই হুমকি দেন। কম্বিং অপারেশন ও গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে যানবাহন না চালানোর বার্তা দেওয়া হয়।


প্রসঙ্গত, ২ এপ্রিল রাতে রুমার সোনালী ব্যাংকে শতাধিক কেএনএফ সদস্য অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা করে পুলিশ, আনসার সদস্যদের জিম্মি করে ১৪টি অস্ত্র লুট ও সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে। পরদিন ৩ এপ্রিল থানচিতে গুলিবর্ষণ এবং কৃষি ও সোনালী ব্যাংক থেকে ১৫ লাখ টাকা লুট এবং ৪ এপ্রিল আবার থানচির সোনালী ব্যাংক ও বাজারে আক্রমণ করে কেএনএফ। এর পর থেকে কেএনএফ দমনে পাহাড়ে অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী।

সূত্র:আজকের পত্রিকা ৯.৪.২৪

Post a Comment

0 Comments