Skip to main content

ব্যাংকগুলোর সি এস আর খাতে ব্যয় কমেছে ১৮%, এক টাকাও ব্যয় করেনি ৫ ব্যাংক!



 করপোরেট সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি বা সিএসআর খাতে ২০২৩ সালে ৯২৪ কোটি ৩২ লাখ ব্যয় করেছে ব্যাংকগুলো। যা আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বা ২০৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা কম। ২০২২ সালে এ খাতে ব্যয় করেছিল ১ হাজার ১২৯ কোটি টাকা।


 বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সিএসআর সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আলোচিত সময়ে সবচেয়ে বেশি ব্যয় হয়েছে স্বাস্থ্য এরপর শিক্ষা এবং পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট সিএসআর ব্যয়ের ৩০ শতাংশ শিক্ষা খাতে, স্বাস্থ্য খাতে ৩০ শতাংশ, পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রশমন ও অভিযোজন খাতে ২০ শতাংশ ব্যয় করতে হবে। বাকি ২০ শতাংশ আয়-উৎসারী কাজ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামো উন্নয়ন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি এবং অন্যান্য খাতের আওতায় ব্যয় করার নির্দেশনা রয়েছে।


 প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ৬১টি তফসিলি ব্যাংক ২০২৩ সালে ৯২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকা ব্যয় করেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করেছে মোট খরচের ৩১ দশমিক ২৬ শতাংশ বা ২৮৯ কোটি টাকা। শিক্ষা খাতে ব্যয় ১৬৩ কোটি ১০ লাখ বা ১৭.৬৫ শতাংশ, পরিবেশ ও জলবায়ু খাতে ব্যয় ৬৮ কোটি ১৭ লাখ টাকা মোট খরচের ৭.৩৮ শতাংশ এছাড়া অন্যান্য খাতে ব্যয় ৪০৪ কোটি টাকা যা মোট ব্যয়ের ৪৩.৭২ শতাংশ।


 প্রতিবেদন বলছে, দেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকগুলোর মধ্যে ২০২৩ সালে৫টি ব্যাংক এক টাকাও সিএসআরে ব্যয় করেনি। এগুলো হলো, বেসিক ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংক। 

অন্যদিকে ২০২২ সালে ৯টি ব্যাংক নিট মুনাফা অর্জন করতে পারেনি। সেগুলো হলো বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক, সিটিজেনস ব্যাংক, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক এবং ন্যাশনাল ব্যাংকব পাকিস্তান। তবে এ ৯ ব্যাংকের মধ্যে ৫টি নিট মুনাফা অর্জন না করা সত্ত্বেও ২০২৩ সালে সিএসআরে ব্যয় করেছে। ব্যাংকগুলো হলো, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।


 ২০১৩ সালের পর লাইসেন্স পাওয়া ১৩টি ব্যাংকে আগের বছরের নিট মুনাফার অন্তত ১০ শতাংশ পরবর্তী বছরে সিএসআর খাতে ব্যয়ের শর্ত রয়েছে। কোনো ব্যাংক নিট মুনাফা করতে না পারলে তারা সিএসআরে ব্যয় করতে পারবে না।

 

নতুন ব্যাংকের বাইরে অন্য ব্যাংক সিএসআরে খরচ করবে কি না, তাদের নিজস্ব বিষয়। পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চতুর্থ প্রজন্মের ৬টি ব্যাংক (সাউথ-বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, মিডল্যান্ড ব্যাংক লিমিটেড, মধুমতী ব্যাংক লিমিটেড, সীমান্ত ব্যাংক পিএলসি, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক পিএলসি ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি) আলোচিত সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শর্ত পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে।

 

ব্যাংকগুলোর মধ্যে বরাবরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি সিএসআর ব্যয় করেছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে ব্যাংকটি এ খাতে ব্যয় করেছে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৪ কোটি টাকা ব্যয় করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। যমুনা ব্যাংক ৫৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা ব্যয় করে তৃতীয় অবস্থানে আছে।


 পর্যায়ক্রমে মার্কেন্টাইল ৫৫ কোটি ৯২ লাখ, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ৫৩ কোটি ৬২ লাখ, আল-আরাফাহ ৫১ কোটি ৩২ লাখ, এক্সিম ৪৩ কোটি ৯৩ লাখ, সাউথইস্ট ব্যাংক ৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ইউসিবি ৩৮ কোটি ৪০ লাখ এবং ব্যাংক এশিয়া ৩২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।


 শরিয়াহভিত্তিক পরিচালিত ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো নিট মুনাফার একটি অংশ ছাড়াও সন্দেহজনক আয়, জাকাতসহ অন্যান্য তহবিল সিএসআর থাতে ব্যয় করে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আলোচ্য সময়ে সিএসআর খাতে নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সিএসআর খাতে ব্যয়ে করেছে ৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে স্বাস্থ্য খাতে ৩৮ শতাংশ শিক্ষায় ৩০ শতাংশ এবং পরিবেশ ও জলবায়ুতে ২১ শতাংশ ব্যয় করেছে।

জনকণ্ঠ ২৮/৩/২৪

Comments

Popular posts from this blog

ডাচ বাংলা ব্যাংকের ৩৯ গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা উধাও!

প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ৩৯ জন গ্রাহকের মোট এক কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্টসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুদকের রংপুর জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সংস্থাটির একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মামলার আসামিরা হলেন- মেসার্স শিরিন ট্রেডার্সের মালিক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট মোছা. জোবেদা বেগম, তার স্বামী মো. আবুল কালাম আজাদ, তার মেয়ের জামাই এ.বি.এম আতাউর রহমান, এজেন্ট ব্যাংকের কর্মচারী মো. শাহজাহান ও জাহাঙ্গীর আলম।   এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন অপকৌশল ও অসৎ উদ্দেশ্যে ডাচ্ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের আড়ালে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ৩৯ জন গ্রাহকের মোট এক কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মোছা. জোবেদা বেগম ও তার স্বামী ২০১৮ সালের অক্টোবরে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে এফডিআর খুলে...

সোনালী ব্যাংককে এক কোটি রুপি জরিমানা করল ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

  লেনদেনের বিধি ও নির্দেশনা লঙ্ঘন করায় বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংককে ৯৬ লাখ ৪০ হাজার রুপি জরিমানা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। মুম্বাইভিত্তিক সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকেও একই অভিযোগে ১ কোটি ৫০ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের। মুম্বাইয়ের ব্যাংকটির বিরুদ্ধে ঋণসংক্রান্ত নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়া, অগ্রিম লেনদেনে ত্রুটি এবং গ্রাহক সুরক্ষা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ আনা হয়েছে। আর সোনালী ব্যাংককের বিরুদ্ধে অসংগতিপূর্ণ লেনদেনে সতর্কতা অবলম্বন করার ব্যর্থতার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকটির বিরুদ্ধে সুইফট সম্পর্কিত কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগও তোলা হয়েছে।  ২০২২ সালের ৩১ মার্চ থেকে চলমান একটি পর্যবেক্ষণের ফল হিসেবে এই জরিমানা করেছে আরবিআই। পর্যবেক্ষণে বেশ কিছু অসংগতিপূর্ণ আচরণ ধরা পড়ে। এ কারণে ব্যাংক দুটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।  সরকারের ভর্তুকির বিপরীতে একটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণের অনুমোদন দিয়েছিল মুম্বাইভিত্তিক সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। এ ছাড়া অননুমোদিত ই–লেনদেনের সঙ্গেও যুক্ত ছিল ব্যাংকটি। ...

এস আলমের কাজের মেয়ের হিসাবে কোটি কোট টাকা?

  বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের কাজের মেয়েও কোটিপতি। শীর্ষ ব্যবসায়ী এস আলমের গৃহকর্মী মর্জিনা আক্তারের নামে ৫ কোটি টাকার সম্পত্তি ছাড়াও মিলেছে বিপুল পরিমাণ সম্পদের খোঁজ। পেশায় গৃহকর্মী হলেও মর্জিনার নামে দু’টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। এছাড়া মর্জিনার নামে কয়েকটি ব্যাংকে ২২টি এফডিআর’এ থাকা এক কোটি টাকা জমা রাখার সন্ধান পাওয়া গেছে। ইসলামী ব্যাংকে চাকরি দেখিয়ে নিজ নামে এ সম্পদ গড়েছে মর্জিনা আক্তার ও তার স্বামী সাদ্দাম হোসেন।  বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য। এতে দেখা যায়, চট্টগ্রামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রবর্তক মোড় শাখায় মর্জিনা আক্তারের নামে গত ২৭ আগস্ট পর্যন্ত এক কোটি ৮৪ লাখ ১৬ হাজার ৭২১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে নগদ ও চেকের মাধ্যমে এসব অর্থ জমা হলেও কিছুদিনের মধ্যে সেই অর্থ উত্তোলন করা হয়। কোটি কোটি টাকার লেনদেন হলেও সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মর্জিনা আক্তারের ব্যাংক হিসাবে এখন জমা আছে মাত্র ৬০৫ টাকা। অন্যদ...