ব্যাংকের ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে মামলা না করে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে ঋণ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য একটি লক্ষ্যমাত্রাও বেঁধে দিয়েছে আর্থিক খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। আগামী ২০২৬ সালের ৩০ জুনের মধ্যে প্রতিটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণস্থিতির ন্যূনতম ১ শতাংশ নগদ আদায় এডিআরের মাধ্যমে করতে হবে। এই লক্ষ্যমাত্রা নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোর সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতেও নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এমন এক সময়ে এ নির্দেশনা জারি করল, যখন খেলাপিতে জর্জরিত ব্যাংক খাত। এর আগেও দফায় দফায় খেলাপি ঋণ আদায়ে কড়াকড়ি আরোপের কথা বলেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন আবার খেলাপি আদায়ে মামলার বদলে এডিআরের কৌশল ঋণখেলাপিদের ব্যাপারে নমনীয় মনোভাব কি না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দ্রুত আদায়ে আদালতের বাইরে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতিকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই আইন অনুসারে আদালত রায় বা আদেশ প্রদানের আগে মামলার যেকোনো পর্যায়ে উভয় পক্ষ আদালতের অনুমতিক্রমে বিকল্প পদ্ধতিতে মামলা নিষ্পত্তি করতে পারবে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য জারি করা নোটিশে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বা সদিচ্ছাকে বিবেচনায় নিয়ে কেস টু কেস ভিত্তিতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা যাবে। ব্যাংকার ও গ্রাহক—উভয় পক্ষের সম্মতিতে বিআইএসিসহ অনুরূপ প্রতিষ্ঠানে তালিকাভুক্ত দক্ষ ও অভিজ্ঞ মধ্যস্থতাকারী অথবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, আইনজীবী, অথবা অন্য যেকোনো উপযুক্ত ব্যক্তি যাঁদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে সফলতার ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে, তাঁদেরকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নির্বাচন করা যাবে।
ব্যাংক খাত বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এতে খেলাপি ঋণ আদায়ে খুব একটা সাড়া মিলবে না; বরং এ ধরনের সুযোগ ঋণখেলাপিদের রক্ষার নতুন কৌশল কি না, তা প্রশ্নসাপেক্ষ।
সূত্র : আজকের পত্রিকা ১৩/৫/২৪
Comments
Post a Comment