Skip to main content

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক এম ডি কে জোরপূর্বক ছুটি!

 


একজন পরিচালকের একক সিদ্ধান্তে জোর করে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমানকে। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দেওয়া এক চিঠিতে সাত পরিচালক বলেছেন, হাবিবুর রহমানকে অনৈতিক ও অন্যায়ভাবে তিন মাসের অগ্রিম ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। এর সুষ্ঠু তদন্ত দাবি (প্রথম পৃষ্ঠার পর)


করেছেন তারা। পাশাপাশি তাকে স্বপদে ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উদ্যোগ চেয়েছেন ওই সাত পরিচালক।


কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পাঠানো ওই চিঠির সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মার্চ ব্যাংকটির অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা ও বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদের ছেলে কাজী খুররম আহমেদের একক সিদ্ধান্তে এমডি হাবিবুর রহমানকে অনৈতিকভাবে তিন মাসের জোরপূর্বক (ফোর্সড) ছুটিতে পাঠানো হয়। এর আগে ২৯ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকটির ৩৮৮তম পর্ষদ সভা থেকে হাবিবুর রহমানকে বের করে দেন কাজী খুররম। একই সভায় ব্যাংক এমডি হাবিবুর রহমানকে ছুটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন খুররম। যদিও সেদিনের সভার সভাপতি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান মনজুর আলম ব্যাংক এমডিকে ছুটিতে পাঠানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের সাত পরিচালক সম্মিলিতভাবে ১৪ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে হাবিবুর রহমানের ছুটিতে পাঠানোর বিরোধিতা করে বিতর্কিত সিদ্ধান্তের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছেন।


চিঠিতে ব্যাংকের পরিচালকরা জানান, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ অসুস্থ থাকায় ৩৮৮তম পর্ষদ সভার সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান মনজুর আলম। প্রায় দুই ঘণ্টা সভা চলার পর কাজী খুররম আহমেদ জরুরি কথা আছে জানিয়ে সভা থেকে ব্যাংক এমডি হাবিবুর রহমান


ও ডিএমডি মোহন মিয়াকে বের করে দেন। এমডি ও ডিএমডি বাইরে গেলে কাজী খুররম হঠাৎ বলতে শুরু করেন, 'আমার


নিকট একটি চিঠি এসেছে, আমাদের এমডি সাহেব জামায়াতে ইসলামীর লোক এবং উনি মানি লন্ডারিংয়ের সঙ্গে জড়িত। বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। ওনাকে এ ব্যাংকে রাখা যাবে না। এই মুহূর্ত থেকেই ওনাকে ছুটিতে পাঠাব এবং ডিএমডি মোহন মিয়া ওনার দায়িত্ব পালন করবেন। ওনাকে ব্যাংকে রাখলে ব্যাংকের ইমেজ নষ্ট হয়ে যাবে এবং যেকোনো মুহূর্তে পুলিশ আমাদের গ্রেপ্তার করতে পারে।' প্রসঙ্গত, গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে যোগাদেন মো. হাবিবুর রহমান। এ এর আগে তিনি ইউনিয়ন রূপান্তর ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংকে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) হিসেবে কাজ করেছেন। ৩৩ বছরের কর্মজীবনে তিনি এনসিসি, যমুনা, প্রাইম, মার্কেন্টাইল ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।


কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অভিযোগ দায়েরকারী পরিচালকরা বলেছেন, 'পরিচালক কাজী খুররমই হাবিবুর রহমানকে এমডি হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে প্রথম প্রস্তাব করেছিলেন এবং আমরা পরবর্তীতে সম্মতি প্রদান করি।' চিঠিতে পরিচালকরা জানান, পর্ষদ সভায় এমডিকে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানোর খুররমের


প্রস্তাবে দুজন পরিচালক তীব্র প্রতিবাদ করেন এবং দুজন পরিচালক সম্মতি না থাকায় নীরব থাকেন। সভায় উপস্থিত দুজন স্বতন্ত্র পরিচালক কাজটি ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন। ওই সভায় ১৫ জন পরিচালক অংশগ্রহণ করেন, যাদের মধ্যে ৫ জন অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন। অনলাইনে অংশগ্রহণকারী পরিচালকরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তড়িঘড়ি করে সভা শেষ করে দেন কোম্পানি সচিব (চলতি দায়িত্ব) আলী রেজা। অবস্থাদৃষ্টে ঘটনাটি মিথ্যা, বানোয়াট, অপপ্রচার ও সত্যের অপলাপ বলে মনে হয়েছে। ৩৮৮তম পর্ষদ সভার পর ৩ মার্চ কাজী খুররমের একক সিদ্ধান্তে এমডি হাবিবুর রহমানকে তিন মাসের জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানো হয়।


যদিও এমডির বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের বিষয়ে পর্ষদ সভায় এজেন্ডা আকারে না এনে বিবিধ বিষয়ে আলোচনা করার বিষয়টি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বলে জানান অভিযোগকারী পরিচালকরা। সভায় সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত না হওয়ার পরও একজন পরিচালকের জোরপূর্বক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া নিয়মমাফিক হয়নি বলেও প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। সভার একপর্যায়ে এমডিকে ছুটিতে পাঠানোর বিষয়টি মূল চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিনের উপস্থিতিতে সুরাহার প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। এমডিকে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানোর ব্যাপারে গত ২৭ ফেব্রুয়ারির বিআরপিডি সার্কুলার নম্বর ৫ যথাযথভাবে পরিপালন করা হয়নি বলে চিঠিতে জানান পরিচালকরা। এমডি হাবিবুর রহমানকে জোরপূর্বক ছুটিতে পাঠানোর প্রক্রিয়ার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ব্যাংকটির সাত পরিচালক। এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ ও এমডি


হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

দেশ রুপান্তর ১/৪/২৪

Comments

Popular posts from this blog

ডাচ বাংলা ব্যাংকের ৩৯ গ্রাহকের দেড় কোটি টাকা উধাও!

প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ৩৯ জন গ্রাহকের মোট এক কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্টসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুদকের রংপুর জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। সংস্থাটির একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। মামলার আসামিরা হলেন- মেসার্স শিরিন ট্রেডার্সের মালিক ও ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট মোছা. জোবেদা বেগম, তার স্বামী মো. আবুল কালাম আজাদ, তার মেয়ের জামাই এ.বি.এম আতাউর রহমান, এজেন্ট ব্যাংকের কর্মচারী মো. শাহজাহান ও জাহাঙ্গীর আলম।   এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিভিন্ন অপকৌশল ও অসৎ উদ্দেশ্যে ডাচ্ বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রমের আড়ালে প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ৩৯ জন গ্রাহকের মোট এক কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন। মোছা. জোবেদা বেগম ও তার স্বামী ২০১৮ সালের অক্টোবরে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট হিসেবে কার্যক্রম শুরু করে বিভিন্ন গ্রাহকের কাছ থেকে এফডিআর খুলে...

সোনালী ব্যাংককে এক কোটি রুপি জরিমানা করল ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

  লেনদেনের বিধি ও নির্দেশনা লঙ্ঘন করায় বাংলাদেশের সোনালী ব্যাংককে ৯৬ লাখ ৪০ হাজার রুপি জরিমানা করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)। মুম্বাইভিত্তিক সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়াকেও একই অভিযোগে ১ কোটি ৫০ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের। মুম্বাইয়ের ব্যাংকটির বিরুদ্ধে ঋণসংক্রান্ত নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যর্থ হওয়া, অগ্রিম লেনদেনে ত্রুটি এবং গ্রাহক সুরক্ষা দিতে ব্যর্থতার অভিযোগ আনা হয়েছে। আর সোনালী ব্যাংককের বিরুদ্ধে অসংগতিপূর্ণ লেনদেনে সতর্কতা অবলম্বন করার ব্যর্থতার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকটির বিরুদ্ধে সুইফট সম্পর্কিত কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগও তোলা হয়েছে।  ২০২২ সালের ৩১ মার্চ থেকে চলমান একটি পর্যবেক্ষণের ফল হিসেবে এই জরিমানা করেছে আরবিআই। পর্যবেক্ষণে বেশ কিছু অসংগতিপূর্ণ আচরণ ধরা পড়ে। এ কারণে ব্যাংক দুটিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।  সরকারের ভর্তুকির বিপরীতে একটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণের অনুমোদন দিয়েছিল মুম্বাইভিত্তিক সেন্ট্রাল ব্যাংক অব ইন্ডিয়া। এ ছাড়া অননুমোদিত ই–লেনদেনের সঙ্গেও যুক্ত ছিল ব্যাংকটি। ...

এস আলমের কাজের মেয়ের হিসাবে কোটি কোট টাকা?

  বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলম গ্রুপের মালিক সাইফুল আলমের কাজের মেয়েও কোটিপতি। শীর্ষ ব্যবসায়ী এস আলমের গৃহকর্মী মর্জিনা আক্তারের নামে ৫ কোটি টাকার সম্পত্তি ছাড়াও মিলেছে বিপুল পরিমাণ সম্পদের খোঁজ। পেশায় গৃহকর্মী হলেও মর্জিনার নামে দু’টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে লেনদেন হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। এছাড়া মর্জিনার নামে কয়েকটি ব্যাংকে ২২টি এফডিআর’এ থাকা এক কোটি টাকা জমা রাখার সন্ধান পাওয়া গেছে। ইসলামী ব্যাংকে চাকরি দেখিয়ে নিজ নামে এ সম্পদ গড়েছে মর্জিনা আক্তার ও তার স্বামী সাদ্দাম হোসেন।  বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব তথ্য। এতে দেখা যায়, চট্টগ্রামে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের প্রবর্তক মোড় শাখায় মর্জিনা আক্তারের নামে গত ২৭ আগস্ট পর্যন্ত এক কোটি ৮৪ লাখ ১৬ হাজার ৭২১ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে নগদ ও চেকের মাধ্যমে এসব অর্থ জমা হলেও কিছুদিনের মধ্যে সেই অর্থ উত্তোলন করা হয়। কোটি কোটি টাকার লেনদেন হলেও সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী মর্জিনা আক্তারের ব্যাংক হিসাবে এখন জমা আছে মাত্র ৬০৫ টাকা। অন্যদ...