নিজের নামে ১০ ভুয়া এন আইডি!৩০ কোটি টাকার ব্যাংক ঋন জালিয়াতি।

 



নিজের নামে ১০টি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন ৩০ কোটি টাকা। প্রতিটি ঋণের জন্য একটি এনআইডি ও একটি জমির দলিল ব্যবহার করতেন। এনআইডিতে নাম-পরিচয় এক থাকলেও সিরিয়াল নম্বর থাকত আলাদা। তবে শেষ রক্ষা হয়নি জালিয়াত চক্রের হোতা জয়নালের। ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে মেঘনা ব্যাংকে প্রায় তিন কোটি টাকা ঋণ আবেদন করে ধরা পড়েছেন গোয়েন্দা জালে। জয়নালের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে আরও তিনজনকে।


ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, জয়নাল এক সময় ইমিটেশন পণ্যের দোকান করলেও পরে জড়িয়ে পড়েন প্রতারণায়। চক্রটি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ জালিয়াতি করে ৩০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের আরও ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার টার্গেট ছিল। শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ। গ্রেফতাররা হলেন- জয়নাল আবেদীন ওরফে ইদ্রিস (৪২), পল্লব দাস (৩৬), রফিকুল ইসলাম খান (৩৮) ও আলিফ হোসেন (২৩)। শুক্রবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পল্লব রংপুর বিভাগীয় নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আউটসোর্সিয়ের মাধ্যমে আইটি সেকশনে খণ্ডকালীন নিযুক্ত ছিলেন। জয়নাল তার মাধ্যমে নিজ নামের জাতীয় পরিচয়পত্র ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়ে পরিবর্তন করিয়ে জালিয়াতিতে ব্যবহার করতেন। পল্লব প্রতি এনআইডি বাবদ জয়নালের কাছ থেকে দুই থেকে তিন লাখ করে টাকা নিতেন।


হারুন-অর-রশীদ বলেন, জয়নালের কার্যকর ১০টি এনআইডি ছিল। রাজধানীতে তার একটি সাততলা বাড়ি এবং চারটি ফ্ল্যাট কেনার তথ্য পেয়েছে ডিবি। সম্প্রতি নন ব্যাংকিং ফিন্যান্সিয়াল প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি থেকে ৫০ লাখ টাকা ঋণ পান জয়নাল। ঋণপ্রাপ্তির কাগজপত্র মেঘনা ব্যাংকে জমা দিয়ে তার নামে প্রায় তিন কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার আবেদন করেন। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হলে সত্যতা যাচাইয়ে গোয়েন্দা পুলিশের সহায়তা চায়। পরে ডিবির রমনা বিভাগের উপকমিশনার হুমায়ুন কবীরের নেতৃত্বে একটি টিম অনুসন্ধান করে জয়নালের ঋণ জালিয়াতির তথ্য পায়।


এক প্রশ্নের জবাবে হারুন-অর-রশীদ বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ অনুমোদনে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তারা জড়িত থাকতে পারেন। তবে সেটি তদন্ত করা হচ্ছে।


ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, জয়নাল একসময় ইমিটেশন পণ্যের দোকান করলেও ব্যবসায় লস করে জড়িয়ে পড়েন প্রতারণায়। তার প্রতারণার জন্য একটি কোম্পানি খুলে সেখান থেকে আরও সাতটি কোম্পানির নামে কাগজপত্র তৈরি করে রাখেন। পরে সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের অসাধু কর্মকর্তাদের দিয়ে তিনি ঋণ নিতেন। সংবাদ সম্মেলনে ডিবির রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার হুমায়ুন কবীর, অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আজহারুল ইসলাম মুকুল এবং অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সহকারী কমিশনার জাবেদ ইকবাল উপস্থিত ছিলেন।

যুগান্তর ৭/৪/২৪

Post a Comment

0 Comments